এমটিনিউজ২৪ ডেস্ক : উচ্চতা মাত্র ৩ ফুট ২ ইঞ্চি হওয়া সত্ত্বেও ‘মা’ হয়েছেন পবা উপজেলার পারিলা ইউনিয়নের বজরপুর গ্রামের মাসুরা বেগম। সেই দিক থেকে উচ্চতার হিসেবে বিশ্বের দ্বিতীয় এবং এশিয়ার ক্ষুদ্রতম মা তিনি।
এক সময় তাঁর মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু ছিল না মাসুরার, থাকতো চাচার জমিতে ঘর করে। অভাব-অনটন ও উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দিনাতিপাত করতেন। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য মাসুরা সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেছিলেন।
আর তার জীবনের গল্প নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর বিষয়টি নজরে আসে সরকারেরও। এর ফলে সরকারের তরফ থেকে পেয়েছে আর্থিক সহযোগিতা ও আশ্রয়ণ প্রকল্পে একটি সুন্দর পাকা বাড়ি।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে বিশ্বের দ্বিতীয় এবং এশিয়ার প্রথম ক্ষুদ্রাকৃতির মা মাসুরা বেগমের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন রাজশাহী জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ।
তিনি বাড়ির স্বপ্ন পূরণের পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) সকালে নিজ কার্যালয়ে ডেকে মাসুরার হাতে রাজশাহী এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে দোকান করার জন্য ৫০ হাজার টাকার অনুদান ঘোষণা করা হয়।
বৃহস্পতিবার অনুদানের প্রথম দফায় ২৫ হাজার টাকার চেক তুলে দেন রাজশাহী এসোসিয়েশনের সভাপতি ও রাজশাহী জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী এসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) কল্যাণ চৌধুরী, সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন প্রামাণিক, সাধারণ সম্পাদক ড. তসিকুল ইসলাম রাজা, নির্বাহী সদস্য আকবারুল হাসান মিল্লাত প্রমুখ। মাসুরার সাথে ছিলেন, তার আট বছরের কন্যা মরিয়ম ও স্বামী মনিরুল ইসলাম।
উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার শাখার উপপরিচালক মো. আশরাফুল ইসলাম, এডিসি (উন্নয়ন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) সরকার অসীম কুমার, এডিসি (শিক্ষা ও আইসিটি) জয়া মারীয়া পেরেরা, এডিএম সাবিহা সুলতানা, এডিসি (রাজস্ব) মো. আনিসুল ইসলাম।
চেক গ্রহণের পর মাসুরা জানান, সোনার দেশ পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর রাজশাহী জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ মহোদয়ের নজরে আমার স্বপ্নের বাড়ি ও দোকানের বিষয়টি আসে। তিনি সম্প্রতি তাদেরকে তার নিজ কার্যালয়ে ডেকে পাঠান। তারা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করেন। এ সময় তাৎক্ষণিকভাবে জেলা প্রশাসক দোকান করার জন্য ৫০ হাজার টাকার আর্থিক সহযোগিতা করেন।
এর আগে তার ইচ্ছা অনুযায়ী মুজিববর্ষের আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় তার গ্রাম বজরপুর নির্মাণ হওয়া ছয়টি বাড়ির মধ্যে একটি বাড়ি পেয়েছেন মাসুরা। কর্মসংস্থানের স্বপ্ন পূরণের জন্য জেলা প্রশাসক এবং রাজশাহী এসোসিয়েশনের সদস্য বৃন্দকে ধন্যবাদ ও আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানান।
জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ জানান, এশিয়ার ক্ষুদ্রতম ‘মা’ মাসুরার মাথা গোঁজার ঠাঁই ও কর্মসংস্থানের আবদার ছিল। ইতোমধ্যে পবায় বজরপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পে একটি সুন্দর পাকা বাড়ি দেয়া হয়েছে। সেখানে সে স্বামী ও সন্তান নিয়ে বসবাস করছে। কর্মসংস্থানের স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে দোকান করার জন্য আর্থিক সহযোগিতাও করা হলো। অনুদানের বাকি অর্থ খুব শিগগিরই প্রদান করা হবে।