সোমবার, ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ০৪:৫৬:১৬

খরচ ৫ লাখ, ষাঁড়টির দাম ১৫ লাখ!

খরচ ৫ লাখ, ষাঁড়টির দাম ১৫ লাখ!

টাঙ্গাইল : শেষ মুহূর্তে কোরবানির পশু কেনাকাটায় ব্যস্ত লোকজন।  হাট-বাজারের হরেকরকম পশু বিক্রি প্রায় শেষ পর্যায়ে।  দামও ভিন্ন রকম।  কিন্তু এখনো বিক্রি হয়নি শাহানুর মিয়ার নজরকাড়া ষাঁড়টি।

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের এই ষাঁড়ের দাম হাঁকানো হচ্ছে ১৫ লাখ টাকা।  ষাঁড়টির মালিক উপজেলার ৫নং বানাইল ইউনিয়নের ভাবখণ্ড বাজারের পূর্ব পাশের বানাইল গ্রামের মো. হাবিবুর রহমান ছেলে মো. শাহানুর মিয়া (৬০)।

গরু মোটাতাজাকরণে কোনো প্রকার ব্যবস্থা ছাড়াই সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে লালন-পালন করেন তিনি। কালো রংয়ের ষাঁড়টির ওজন প্রায় এক টন।

স্থানীয় গরু বেপারিদের ধারণা, এই ষাঁড়টিই হয়তো বছরের জেলার সবচেয়ে বড় ষাঁড়।  কৃষক শাহানুর মিয়া ষাঁড়টির দাম হাঁকাচ্ছেন ১৫ লাখ টাকা।  অনেকেই বিভিন্ন দাম করছেন বলে জানান শাহানুর মিয়া।

সাধারণ বেপারীদের চেয়ে শিল্পপতি, সরকারের কোনো উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা বা এমপি ও মন্ত্রীদের কাছে ষাঁড়টি বিক্রি করার ইচ্ছা কৃষক শাহানুর মিয়ার।  
 
ষাঁড়টিএক নজর দেখতে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে ভিড় করছেন শত শত মানুষ।
    
জানা গেছে, ষাঁড়টিকে কৃষক শাহানুর মিয়া ও তার স্ত্রী সুরাইয়া বেগম গোয়ালঘরে ফ্যানের নিচে রাখছেন
এবং সর্বক্ষণিক নজর রাখছেন।

শাহানুর মিয়া জানান, গরু লালন-পালন করা তার শখ।  তার বয়স যখন ১২ তথন থেকেই গরু লালন পালন করে আসছেন তিনি।

গরু লালন-পালন যেন তার নেশা ও পেশা হয়ে উঠেছে।  পারিবারিকভাবে সচ্ছল না হলেও গরুর প্রতি তার একটা আলাদা টান রয়েছে।

গত ৫ বছর ধরে তিনি পালের দেশি সিন্দি জাতের একটি ষাঁড় পালন করে আসছেন।  ষাঁড়টিকে তিনি নিজের সন্তানের মত লালন-পালন করেন।  এই ষাঁড়টিকে ঘিরেই তার এখন সব।

ষাঁড়টির খাদ্য তালিকায় রয়েছে ঘাস, লতাপাতা, খড়, চিনি, গুড়, কলাসহ বিভিন্ন ধরনের ছোলা, ডাল, খৈল, ভুসি, কিসমিস, আম, ভাতের মার।  

গত পাঁচ বছরে ষাঁড়টির কোনো অসুখ হয়নি। তারপরও টাঙ্গাইলের পশু চিকিৎসক ডা. মো. আফাজ উদ্দিকে বাড়িতে ডেকে এনে ষাঁড়টির শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করিয়েছেন তিনি।

ষাঁড়টিকে মোটাতাজাকরণে কোনো হরমোন বা ইনজেকশন দেয়া হয়নি বলেও জানান তিনি।
ষাঁড়টি লালন-পালন করতে গত পাঁচ বছরে তার শ্রমসহ খরচ হয়েছে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা।  

গত বছর কোরবানির সময় ষাঁড়টি বিক্রির জন্য উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল।  বেপারিরা দাম করেছিলেন ৫ লাখ টাকা।  লাভ না হওয়ায় ষাঁড়টি তখন বিক্রি করেননি তিনি।

এ ব্যাপারে কৃষক শাহানুর মিয়া ও তার স্ত্রী সুরাইয়া বেগম জানান, ষাঁড়টি লালন-পালন করতে গত পাঁচ বছরে তাদের প্রচুর টাকা দেনা হয়েছে।  এলাকাবাসী, কয়েকটি এনজিও ও ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ষাঁড়টিকে লালন-পালন করেছেন তারা।
১২ সেপ্টেম্বর,২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে