ইমতিয়াজ রুবেল, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি: টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলায় মা ও তিন মেয়েকে পুড়িয়ে হত্যা মামলার সম্পূরক অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে নারাজির আবেদন গ্রহণ করেছেন জেলা জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিমের আদালত।
শুনানি শেষে সিআইডির দেয়া অভিযোগপত্রে বাদ দেয়া একজনকে আবার আসামি হিসেবে গণ্য করে মামলাটি জেলা দায়রা জজ আদালতে পাঠানো হয়েছে। ওই মামলার বাদী মোফাজ্জল হোসেন গত ১২ এপ্রিল মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছেন।
টাঙ্গাইলের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম সানজিদা সরোয়ার গত ২৯ মার্চ মামলাটির শুনানি করেন। ওই আসামির নাম হারুন অর রশিদ ওরফে রাজীব।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণী সূত্রে জানা গেছে, মেয়েকে বিয়ে দিতে রাজি না হওয়ায় ২০১৪ সালের ৬ অক্টোবর রাতে মির্জাপুরের সোহাগপাড়া গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী মজিবর রহমানের স্ত্রী হাসনা বেগম (৩৫) এবং তাঁর তিন মেয়ে মনিরা আক্তার (১৪), বাক প্রতিবন্ধী মীম আক্তার (১০) ও মলি আক্তারকে (৭) ঘরে ঘুমন্ত অবস্থায় পেট্রল ঢেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। পরদিন ওই গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমকে প্রধান করে ১০ জনকে আসামি করে মজিবরের শ্যালক মোফাজ্জল হোসেন মির্জাপুর থানায় মামলা করেন।
এ দিকে বাদীর আইনজীবী মাসুদ রেজা ফেরদৌস জানান, আসামি নুর মোহাম্মদ ওরফে নিপু তাঁর স্বীকারোক্তিতে ওই ঘটনায় আগুন দিতে পেট্রল ঢেলে হারুন অর রশিদ ওরফে রাজীব তাঁকে সহযোগিতা করে ছিলেন বলে উল্লেখ করেছেন।
এ ছাড়া ঘরের দরজার সামনে তাঁরা দুজন মাটি দিয়ে বেড়া দেন, যাতে ভেতর থেকে তেল বের হতে না পারে। পরে জাহাঙ্গীর ঘরে আগুন লাগান। কিন্তু পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) তদন্তের পর রাজীবকে অভিযোগপত্র থেকে বাদ দেয়।
এ কারণে আদালত মামলাটি দায়রা জজ আদালতে পাঠিয়েছেন। আগামী ৫ মে মামলার শুনানির তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।
পুলিশ বিভিন্ন সময় ওই মামলার এজাহারভুক্তসহ সন্দেহভাজন ২২ জনকে গ্রেপ্তার করে। ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর জাহাঙ্গীরের চাচাতো ভাই ও এজাহারভুক্ত আসামি নুর মোহাম্মদকে র্যাব গ্রেপ্তার করে।
তিনি টাঙ্গাইলের আদালতে ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। একই বছরের গত ২২ নভেম্বর জাহাঙ্গীরকে গ্রেপ্তার করা হলে তিনিও আদালতে স্বীকারোক্তি দেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও মির্জাপুর থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এস.আই) শ্যামল কুমার দত্ত ওই দুজনসহ মির্জাপুরের মাছরাঙা ফিলিং স্টেশনের চার কর্মচারীর বিরুদ্ধে টাঙ্গাইলের আদালতে অভিযোগপত্র দেন।
এর বিরুদ্ধে গত বছরের ২৫ মার্চ টাঙ্গাইলের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আমলি আদালতে বাদী নারাজি দেন। বিষয়টি বিবেচনায় এনে আদালত ওই বছরের ২৭ মে মামলাটি তদন্তের জন্য সি-আইডিকে দেন।
গত ৩ ডিসেম্বর সি-আইডির (এস.আই) সোহরাব হোসেন আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেন। কিন্তু অভিযোগপত্র থেকে হারুন অর রশিদ ওরফে রাজীবকে বাদ দেওয়া হলে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বাদী ওই অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধেও নারাজি দেন।
১৯ এপ্রিল ২০১৬/এমটিনিউজ২৪.কম/প্রতিনিধি/এইচএস/কেএস