সোমবার, ১৬ মে, ২০১৬, ০৪:৩৯:১৩

দুশ্চিন্তা কাটলো সেই বাসন্তির

দুশ্চিন্তা কাটলো সেই বাসন্তির

টাঙ্গাইল : কঠোর পরিশ্রম আর দারিদ্র্যতার সঙ্গে লড়াই করে বিজ্ঞানে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পাওয়া বাসন্তির চোখে-মুখে ছিল অন্ধকার।  কি করবে ভেবেই পাচ্ছিলেন না এই মেধাবী শিক্ষার্থী।  অসুস্থ বাবার সংসারে মেয়েকে নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় ছিলেন মা।  ভবিষ্যতে উচ্চশিক্ষা নিয়ে হতাশায় থাকা বাসন্তির ভাগ্য ফিরতে যাচ্ছে।  

বাসন্তির কলেজে ভর্তির দায়িত্ব নিলেন এক ছাত্রলীগ নেতা।  দরিদ্র মেধাবী ছাত্রী বাসন্তি বণিককে কলেজে ভর্তির দায়িত্ব নিলেন টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি খন্দকার নাইম হোসেন।

ছাত্রলীগ সভাপতি খন্দকার নাইম হোসেন বাসন্তির কলেজে ভর্তির সব ব্যয়বার বহনের ইচ্ছা প্রকাশ করায় বাসন্তি ও তার পরিবারের সদস্যরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

খন্দকার নাইম হোসেন বলেন, একজন দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীকে সহযোগিতা করা নৈতিক দায়িত্ব।  সেই দায়িত্ববোধ থেকেই বাসন্তির উচ্চশিক্ষার পথ প্রসারিত করতে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছি।


বাসন্তি বণিকের বাড়ি মির্জাপুর পৌরসভার মির্জাপুর গ্রামে।  তার পিতার নাম নারায়ন চন্দ্র বণিক।  মায়ের নাম কমলা বণিক।  তিন বোনের মধ্যে সে সবার ছোট।  

বাসন্তি এ বছর মির্জাপুর পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছে।  তিন শতক জমির ওপর বসতভিটি ছাড়া তাদের অন্য কোনো সম্পদ নেই।

অন্যের ফায়-ফরমায়েশ করে বাসন্তির বাবা-মায়ের  যে সামান্য আয় হয় তা দিয়েই কোনো রকমে  সংসার চলে।  কিন্ত পিতা নারায়ন চন্দ্র বণিক গত তিন মাস ধরে গুরুতর অসুস্থ।  মায়ের সামান্য আয় হয় দিয়েই সংসার চলে কোন রকমে।

মা কমলা রানী বণিক জানিয়েছেন, আর্থিক সংকটের কারণে প্রাথমিক পর্যায়েিই লেখাপড়া বন্ধ করার চিন্তা-ভাবনা করা হয়েছিল।  কিন্ত বাসন্তির মেধায় ও সরিষাদাইড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মুক্তি রানী সাহার সহযোগিতায় ২০১০ সালে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় সে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পায়।

তিনি জানান, পরবর্তীতে সে মির্জাপুর পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে অষ্টম শ্রেণিতেও ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পায়।  বাসন্তিকে বিভিন্ন সময় কাগজ কলমসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম দিয়ে সহযোগিতা করেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক হরেকৃষ্ণ সরকার, খুশি মোহন সরকার এবং নূরুল ইসলাম তাকে বিনাবেতনে প্রাইভেট পড়িয়েছেন।  

লেখাপড়ার ফাঁকে ফাঁকে সে নিজেও বাচ্চাদের পড়িয়ে তার লেখাপড়ার খরচ জুগিয়েছে।  এভাবেই বাসন্তি লেখাপড়া করে এসএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়েছে বলে জানান তার মা।

১৬ মে, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/প্রতিনিধি/এমআর/এসএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে