আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মুসলিম নারীদের হিজাব পরিধানে নিষেধাজ্ঞা জারির এক প্রস্তাব নিয়ে বিতর্ক হয়েছে নেদারল্যান্ডস সংসদে। এই প্রস্তাব আইন আকারে পাস হলে স্কুল, হাসপাতাল, গণপরিবহনসহ বিভিন্ন স্থানে নারীদের হিজাব পরা নিষিদ্ধ হবে। তবে হিজাব পরিধানকে সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করার কথা নেই প্রস্তাবে।
বার্তা সংস্থা এপির খবরে বলা হয়, নেদারল্যান্ডে মাত্র কয়েকশ’ মুসলিম নারী হিজাব পরিধান করে থাকেন। তা সত্ত্বেও ফ্রান্স বা বেলজিয়ামের মতো ইউরোপীয় দেশগুলোর উদাহরণ অনুসরণ করে নেদারল্যান্ডেও হিজাব নিষিদ্ধের জন্য কাজ করছে। তবে এ নিয়ে দ্বিমত রয়েছে রাজনীতিবিদদের মধ্য।
নেদারল্যান্ড সংসদের নিম্নকক্ষে এ নিয়ে অনুষ্ঠিত বিতর্কে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রোনাল্ড প্ল্যাসটার্ক বলেন, তারা যে প্রস্তাব নিয়ে বিতর্ক করছেন তাতে অন্য দেশগুলোর মতো হিজাব পরিধানে পূর্ণাঙ্গ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে না। তিনি প্রস্তাবিত বিলকে ‘আঞ্চলিকভাবে নিরপেক্ষ’ বলে অভিহিত করেছেন। তবে স্বীকার করে নিয়েছেন যে এ প্রস্তাবনা নিয়ে বিতর্কও রয়েছে।
প্ল্যাসটার্ক বলেন, নেদারল্যান্ডের মতো একটি মুক্ত দেশে কেউ চাইলে মুখ ঢেকে নিয়েও জনসম্মুখে আসার অনুমতি থাকা উচিত। কিন্তু সরকারি কার্যালয়, স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র বা শিক্ষা সংশ্লিষ্ট স্থানে প্রত্যেকেরই পরস্পরকে দেখার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। সংসদের পাবলিক গ্যালারি থেকে হিজাব পরা কিছু নারীও এই বিতর্ক দেখতে উপস্থিত ছিলেন।
ওই বিতর্কে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য জ্যাকুয়েস মোনাশ হিজাবকে ‘নারীদের ওপর নিপীড়নের প্রতীক’ হিসেবে অভিহিত করেন এবং গ্যালারিতে হিজাব পরা নারীদের উপস্থিতি নিয়ে আপত্তি তোলেন। এই প্রস্তাবনার বিরোধী ডি৬৬ পার্টির ফাতমা কোসের কায়া বলেন, এই আইনটি অপ্রয়োজনীয়। কারণ নেদারল্যান্ডের অনেক প্রতিষ্ঠানেরই সুনির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে নারীদের হিজাব ও নেকাব পরা থেকে বিরত রাখার কর্তৃত্ব দেয়া রয়েছে।
তিনি প্রশ্ন রাখেন, ‘আমরা আজকে কীসের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছি? এটা প্রতীকী আইন প্রণয়ন। কারণ এই চর্চা এখনো প্রচলিত রয়েছে।’ হিজাবে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে উত্থাপন করা এই প্রস্তাবনার ওপর কবে নাগাদ সংসদে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে তা জানা যায়নি। তবে সংসদের নিম্নকক্ষে এই প্রস্তাবনা পাস হলেই এটি আইনে পরিণত হবে না। আইনে পরিণত হওয়ার জন্য সিনেটেও এটি পাস হতে হবে। এমজমিন
২৪ নভেম্বর ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি