আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী খাজা মোহাম্মদ আসিফ জানিয়েছেন, আফগানিস্তানের বিষয়ে পাকিস্তানের অবস্থানকে সমর্থন করেছে চীন, ইরান ও তুরস্ক। আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় পাকিস্তান ও কাবুলের সাথে মিলে কাজ করবে এ দেশগুলো।
বুধবার গণমাধ্যমের সাথে কথা বলার সময় খাজা আসিফ বলেন, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে পাকিস্তানের আত্মত্যাগ স্বীকার করেছে চীন, ইরান ও তুরস্ক এবং যুদ্ধ বিধ্বস্ত আফগানিস্তানের সঙ্কট সামরিকভাবে নিরসন না করে রাজনৈতিক সমাধানের জন্য পাকিস্তানকে পুরোপুরি সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন দেশগুলোর নেতারা।
মন্ত্রী বলেন, এই তিনটি দেশই পাকিস্তানের সাথে একমত হয়েছে যে আফগানিস্তানের সমস্যাগুলোর কোনো সামরিক সমাধান নেই বরং এর রাজনৈতিকভাবে সমাধানের চেষ্টা করা উচিত। এই অঞ্চলের সব দেশগুলোই আঞ্চলিক স্বার্থে আফগানিস্তানে শান্তি চায় এবং সেখানে স্থিতিশীলতার জন্য সাহায্য করতে প্রস্তুত। আফগান সঙ্কটের সর্বশেষ অবস্থা প্রধানমন্ত্রী শহীদ খাকান আব্বাসির কাছে তিনি ব্যাখ্যা করেছেন বলে জানান। আসিফ বলেন, ‘আফগানিস্তানে পাকিস্তানের সীমান্তের কাছাকাছি এলাকায় ভারত যে বড় ধরনের বিনিয়োগ করছে তা নিয়ে আমাদের গুরুতর আপত্তি আছে।’
পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ বিষয়ে তার ভবিষ্যৎ পদেেপর কথা সাংবাদিকদের জানান। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে তার আসন্ন সফরে আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনিসহ বিশ্বের নেতাদের সাথে বৈঠক করবেন।
সোমবার তেহরান সফরকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মার্কিন বাহিনী আফগানিস্তানে শান্তি ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ হয়েছে এবং এখন এই দ্বন্দ্বের নিরসনে রাজনৈতিকভাবে আলোচনার ওপর জোর দিতে হবে।
গত সপ্তাহে ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের সেক্রেটারি অব স্টেট রেক্স টিলারসনের সাথে আসিফের সাাৎকারের কথা থাকলেও এই সফরগুলোর কারণে তা পিছিয়ে দেয়া হয়। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিযোগের পর যুক্তরাষ্ট্রের দণি এশীয়বিষয়ক ভারপ্রাপ্ত সহকারী সচিব এলিস ওয়েলসের সফরও স্থগিত করেছে পাকিস্তানি সরকার।
এই বছরের শেষের দিকে বেইজিংয়ের উদ্যোগে পাকিস্তান, চীন ও আফগানিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের প্রথম ত্রিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। চীনের সাম্প্রতিক সফরের সময় খাজা আসিফ এই বৈঠকের প্রতি তার সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন। এই বৈঠকে কৌশলগত যোগাযোগ, বাস্তব সহযোগিতা এবং নিরাপত্তা সংলাপের ওপর গুরুত্ব দেয়া হবে।
ক্যাসপারস্কির পণ্য ব্যবহারে ট্রাম্প প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা
‘জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে’ যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি সব সংস্থাকে ৯০ দিনের মধ্যে তাদের নেটওয়ার্ক থেকে ক্যাসপারস্কি ল্যাবের সফটওয়্যার সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। বুধবার হোমল্যান্ড সিকিউরিটি দফতরের জারি করা নির্দেশনায় বলা হয়েছে, মস্কোভিত্তিক ওই সাইবার নিরাপত্তা ফার্মের সাথে রাশিয়ার গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর যোগাযোগ নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন। ফলে ওই কোম্পানির এন্টি ভাইরাস সফটওয়্যার জাতীয় নিরাপত্তাকে বিপন্ন করে তুলতে পারে বলে তারা মনে করছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি নেটওয়ার্কে ক্যাসপারস্কির সফটওয়্যার ব্যবহার নিষিদ্ধ করার বিষয়ে সিনেটে চলতি সপ্তাহে নির্ধারিত ভোটাভুটির আগেই এ পদপে নেয়া হলো। ক্যাসপারস্কি ল্যাব ক্রেমলিনের সাথে কোনো ধরনের যোগাযোগ থাকার অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে। কিন্তু ওই অভিযোগের কারণে যুক্তরষ্ট্রের বেশ কয়েকটি বিপণন সংস্থা ইতোমধ্যে ক্যাসপারস্কির পণ্য বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে।
বিশ্বজুড়ে ৪০ কোটির বেশি ব্যবহারকারী রয়েছে ক্যাসপারস্কির। তবে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছে পণ্য বিক্রির েেত্র রাশিয়ার এ কোম্পানি কখনোই খুব বেশি সফল হয়নি। ক্যাসপারস্কি কর্তৃপ এক বিবৃতিতে বলেছে, রাশিয়ার ডেটা শেয়ারিং আইনের ভুল ব্যাখ্যা করে তাদের বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ আনা হচ্ছে। ওই অভিযোগের বিশ্বাসযোগ্য কোনো প্রমাণ এ পর্যন্ত কেউ দেখাতে পারেনি এবং তা পুরোপুরি ভিত্তিহীন। যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি দফতরের সিদ্ধান্তে হতাশা প্রকাশ করলেও ক্যাসপারস্কি বলেছে, ওই অভিযোগ যে ভুয়া, তা তারা প্রমাণ করবে।
দুই মাস আগে ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্যাসপারস্কির প্রধান নির্বাহী ও সিনিয়র কর্মকর্তাদের মধ্যে চালাচালি হওয়া ই-মেইল তারা দেখেছে, যেখানে রাশিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা এফএসবির অনুরোধে একটি গোপন সাইবার সিকিউরিটি প্রকল্পের পরিকল্পনা করার কথা বলা হয়েছে। ওই মেইল থেকে ব্লুমবার্গের ধারণা হয়েছে, কথিত সেই গোপন সাইবার সিকিউরিটি প্রকল্প কেবল সাইবার হামলা ঠেকাতে ব্যবহার করা হবে না; বরং তা হ্যাকারদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে তা রাশিয়ার গোয়েন্দাদের সরবরাহ করবে।
এমটিনিউজ২৪.কম/টিটি/পিএস