আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহতের ঘটনায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে। কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর গোলাগুলি চলছে দুদেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে।
এছাড়া ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষাসহ নিজেদের বাহিনীর শক্তি প্রদর্শন করছে উভয় দেশ। এমন পরিস্থিতিতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার দেশটির বেশ কয়েকটি রাজ্যকে নিরাপত্তা মহড়া চালানোর নির্দেশ দিয়েছে।
এক প্রতিবেদনে সোমবার এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বুধবার (৭ মে) থেকে যুদ্ধ পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য এ মহড়ার নির্দেশ দিয়েছে। এতে সাধারণ মানুষকেও মহড়া দেওয়া হবে।
এনডিটিভি বলছে, দেশ দুইটির চরম উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে এই মুহূর্তে ভারত সরকারের এই পদক্ষেপের তাৎপর্য গভীর। এর কারণ, ভারতে সর্বশেষ এমন মহড়া হয়েছিল ১৯৭১ সালে। সেই সময় ভারত ও পাকিস্তান দুই ফ্রন্টে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিল। তখন ভারতজুড়ে সতর্কতা জারি ছিল।
ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পুলিশ-প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে যে, যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি তৈরি হলে কী করণীয় সে বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিতে হবে।
যেসব প্রস্তুতির কথা বলা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে, বিমান হামলার সতর্কতা সাইরেন বাজলে কী করণীয়, বেসামরিক নাগরিক ও শিক্ষার্থীদের আত্মরক্ষামূলক প্রশিক্ষণ, হঠাৎ ব্ল্যাক আউট হলে কিংবা যুদ্ধ পরিস্থিতিতে স্থানান্তরিত হওয়ার প্রয়োজন পড়লে কী করণীয়।
এ ছাড়াও রয়েছে, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর সুরক্ষা ব্যবস্থা নেওয়া, মানুষ সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা হালনাগাদ ও অনুশীলন, রাজ্যগুলোর সিভিল ডিফেন্সেরও উদ্ধারকাজ সংক্রান্ত মহড়া।
এরইমধ্যে ভারতের পাঞ্জাবের ফিরোজাবাদে গতকাল মঙ্গলবার রাতে ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় আধ-ঘণ্টার ব্ল্যাকআউট মহড়া হয়েছে। সেনা কর্তৃপক্ষ স্থানীয় বিদ্যুৎ বিভাগকে নির্ধারিত সময়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রাখার অনুরোধ করেছিল।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই মহড়ার উদ্দেশ্য যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে ব্ল্যাকআউট কৌশল প্রয়োগের প্রস্তুতি।
কাশ্মীরে হামলার পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং পাকিস্তান ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দিয়েছেন। মোদি হুঁশিয়ার বার্তা দিয়েছেন যে, যারা এই ষড়যন্ত্র করেছে বা হামলা চালিয়েছে তারা কল্পনাতীত শাস্তি পাবে।
এরইমধ্যে মোদি দেশটির তিন বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছেন। তিনি কাশ্মীরে হামলার বদলা নিতে সশস্ত্র বাহিনীকে পালটা আক্রমণের পূর্ণ স্বাধীনতাও দিয়েছেন।