বিনোদন ডেস্ক: যারা বাংলা ছবি দেখেন তারা এই অভিনেত্রীকে চিনবেন না তা হয় না। বলা চলে দুই বাংলায় বেশ জনপ্রিয় পশ্চিবঙ্গের এই অভিনেত্রী। তাহলে চলুন খোলাষা করা যাক, তিনি আর কেউ নন, অনামিকা সাহা।
পর্দায় প্রণাম আর অফ স্ক্রিনে থাপ্পড়―কলকাতার বাংলা চলচ্চিত্র জগতে খলনায়িকার চরিত্র হোক অথবা মমতাময়ী মা, সবখানেই দাপটের সঙ্গে অভিনয় করেছেন অনামিকা সাহা। কিন্তু অনেকেই হয়তো জানেন না, নায়িকার চরিত্রে অভিনয় করার বয়সে তিনি মা, খালা, দিদিমার চরিত্রে অভিনয় করেছেন।
কোনোকালেই তিনি নায়িকার চরিত্রে অভিনয় করতে চাননি, নিজের ওজন বাড়িয়ে নিয়েছিলেন। কিন্তু কেন এমনটা করেছিলেন অভিনেত্রী? অনামিকা সাহার বক্তব্য, তার গলা সুন্দর ছিল বলে শ্বশুরবাড়ির লোক তাকে বলত রেডিওতে নাটক করার জন্য।
এই সময় পাঁচ হাজারেরও বেশি নাটক করেছিলেন তিনি। কিন্তু মেয়ে হওয়ার পরে তার আর এই কাজ ভালো লাগত না, তখন তিনি শ্বশুরমশাইয়ের অনুমতি নিতে চান অভিনয় করার জন্য। তিনি বলেন, "শ্বশুরমশাই আমাকে বললেন, 'আমাদের কোনা প্রেজুডিস নেই; কিন্তু এমন কোনো চরিত্রে অভিনয় কোরো না যেটা আমাদের বসে দেখতে খারাপ লাগে। "
তিনি আরো বলেন, 'এইবার আমি ভাবলাম, নায়িকা হলে বুকে জড়াজড়ি করতে হবে, বিছানায় শুতে হবে, ক্লোজ সিন থাকবেই। তার চেয়ে আমি মা, মাসি, ঠাকুমা, দিদিমার চরিত্রে অভিনয় করব। তাহলেই আমি অভিনয় করতে পারব। আমি অভিনয়টাকে এতটাই ভালোবাসি। ' এরপর তিনি এই কথাগুলো চিরঞ্জিৎকে বললে তিনিই তাকে পথ দেখান।
অভিনেত্রীর কথায়―চিরঞ্জিৎ আমাকে বুদ্ধি দিল, 'তুই পান্তাভাত, ফেনাভাত খেয়ে ঘুমো। মুখটা খাটে ঝুলিয়ে দিয়ে ঘুমো। ' কারণ আমার গালটা এ রকম ফোলা ছিল না, ভাঙা ছিল। চিরঞ্জিৎ বলত, 'দেখবি তোর মাংস এসে যাবে, তুই মোটা হয়ে যাবি। '
এরপর চিরঞ্জিতের কথা শুনে মোটা হওয়ার চেষ্টা করলেন অভিনেত্রী। নিজের এই চেষ্টার প্রসঙ্গে বলেছেন, 'চিরঞ্জিতের কথা আমি শুনেছিলাম। সত্যি সত্যি দেখলাম তা-ই হলো। আমার সিজার বেবি হলো। এক্সারসাইজ করতাম না, বেল্ট পরতাম না। এসব করে মোটাসোটা হয়ে ফিরলাম অভিনয়ে। মোটা না হলে তো পাঠ করতে দিচ্ছিল না, আর অভিনয় না করে আমি থাকতে পারছিলাম না। আমার ভালো লাগত না। '
যাদের মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন অনামিকা, সেই সকল অভিনেতার সাথে বয়সের ব্যবধানও তার বেশি ছিল না। অনামিকা সাহার কথায়, 'অভিষেক চট্টোপাধ্যায় ৫৮ বছর বয়সে চলে গেল। আমার বর্তমান বয়স ৬৩ বছর। কিন্তু আমি ওর মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছি।
ফলে ওরা সকলেই আমার বন্ধুর মতো। বুম্বা (প্রসেনজিৎ) আমাকে ক্যামেরার সামনে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করত, তার পরই থাপ্পড় মারত। এই রকম মজাদার সম্পর্ক ছিল আমাদের। এই রকমই তিন-চার বছরের ব্যবধান ছিল আমার সঙ্গে ওদের বয়সের। তাপস পাল ছিল আমার চেয়ে এক বছরের বড়। '