দিনাজপুর : ফুলবাড়ী ট্রাজেডি দিবসে আগামী সেপ্টেম্বরের ৩০ তারিখের মধ্যে ছয় দফা চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নের দাবিতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- অক্টোবরের প্রথম থেকে ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত চারটি উপজেলা, ইউনিয়নগুলোতে প্রতিবাদী সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিল, পথসভা ও গ্রাম কমিটি গঠন করা হবে। ২৫ অক্টোবর উপজেলা ঘেরাও ও উপজেলা পরিষদে অবস্থান ধর্মঘট করা হবে। এরমধ্যেও দাবি আদায় না হলে ২১ নভেম্বর ফুলবাড়ীর লোকজনকে নিয়ে দিনাজপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে স্মারকলিপি প্রদান ও অবস্থান ধর্মঘট, ২১ ডিসেম্বর ফুলবাড়ীতে অর্ধদিবস হরতাল এবং ওইদিন আগামী দিনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
ফুলবাড়ী ট্রাজেডি দিবসে জাতীয় কমিটির সমাবেশে কমিটির পক্ষ থেকে ফুলবাড়ী শাখার আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম জুয়েল এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
এদিকে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে এবং কালোব্যাচ ধারণ, শোক র্যালি, শহীদ স্মৃতি সৌধে পুষ্পার্ঘ অর্পণের মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে ফুলবাড়ী ট্রাজেডির ১০ম বার্ষিকী।
দিনটি পালনে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি ও ফুলবাড়ীবাসীর পক্ষ থেকে ফুলবাড়ী সম্মিলিত পেশাজীবী সংগঠনের ব্যানারে পৃথক কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
শুক্রবার সকাল ১০টায় নিমতলা মোড় থেকে একটি শোকর্যালি বের করে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির নেতাকর্মীরা। পরে তারা শহীদ বেদীতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন। বেলা ১১টা থেকে তারা নিমতলা মোড়ে একটি প্রতিবাদী জনসভা করেন।
এতে অংশগ্রহণ করেন কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ, জ্বালানী কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান বিডি রহমতউল্লাহ, সিপিবি’র কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য শাহাদৎ হোসেন, গণফ্রন্টের কেন্দ্রীয় নেতা টিপু বিশ্বাস, কমিউনিস্ট লীগের মোশাররফ হোসেন নান্নু, বাসদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি সাইফুল হক, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী ফ্রন্ট সভাপতি মোসরেকা মিশু, গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েত সাকি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তানজিম উদ্দিন, সিপিবি’র কেন্দ্রীয় নেতা নূর আহমেদ বকুল প্রমুখ।
উল্লেখ্য, ২০০৬ সালের ২৬ আগস্ট উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা খনি প্রকল্প বাতিল, জাতীয় সম্পদ রক্ষা এবং বিদেশি কোম্পানি এশিয়া এনার্জিকে দিনাজপুর থেকে প্রত্যাহারের দাবিতে আন্দোলন করে জনগণ। এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতার ওপর পুলিশ ও তৎকালীন বিডিআর (বিজিবি) নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান আল-আমিন, তরিকুল, সালেকীন নামে তিন তরুণ এবং আহত হন দু’শতাধিক আন্দোলনকারী।
ছয় দফা চুক্তির মধ্যে ছিল এশিয়া এনার্জিকে দেশ থেকে বহিষ্কার, দেশের কোথাও উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলন করা যাবে না, নিহত ও আহতদের ক্ষতিপূরণ, নিহতদের স্মৃতিসৌদ্ধ নির্মাণ, গুলি বর্ষণে দায়ীদের বিচারের মাধ্যমে শাস্তি ও আন্দোলনকারী জনগনের বিরুদ্ধে দায়ের করা সব ধরনের মামলা প্রত্যাহার।
২৬ আগস্ট, ২০১৬/এমটিনিউজ/সৈকত/এমএম