গাজীপুর: গাজীপুরের কালীগঞ্জে ছেলের ছুরিকাঘাতে বাবা খুন হয়েছেন। এ সময় মা ও বড় ভাই আহত হয়েছেন। স্থানীয়দের সহযোগীতায় ঘাতক ছেলেকে আটক করেছে পুলিশ। রোববার সকালে উপজেলার তুমলিয়া ইউনিয়নের সোমবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ঘাতক নকিব হাসান হৃদয় (১৮) ওই এলাকার আব্দুল হাই (৬০) এর ছেলে। হৃদয় কালীগঞ্জ আরআরএন পাইলট সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ায় আগামী বছর আবারও পরীক্ষার দেওয়ার কথা ছিল। বাবা আব্দুল হাই স্থানীয় সোমবাজারে রড-সিমেন্টের ব্যবসায়ী ছিলেন।
নিহতের শ্যালক আব্দুল আলিম জানান, প্রতিদিনের মত শনিবার রাতে খাওয়া-দাওয়া করে এক রুমে বাবা-মা ও অন্য রুমে দুই ভাই ঘুমিয়ে পড়ে। রোববার সকাল পৌনে ৬টায় হৃদয় ছুরি নিয়ে ঘুমন্ত বাবাকে উপর্যুপরি আঘাত করে এবং মাথায় রড দিয়ে আঘাত করে। এ সময় হৃদয়ের মা টের পেয়ে বাঁধা দিলে মাকেও রড দিয়ে আঘাত করে। মায়ের চিৎকারে বড় ভাই নিলয় এগিয়ে এলে তাকেও আঘাত করে। পরে স্থানীয়দের সহযোগীতায় আহত অবস্থায় আব্দুল হাইকে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি জানান, গত ৪/৫ বছর ধরে নকিব হাসান হৃদয় মানসিকভাবে বিকারগ্রস্থ ছিল। হৃদয়-নিলয় ছাড়া তাদের আর কোন ভাই-বোন ছিল না। বড় ভাই নিলয় নরসিংদী সরকারী কলেজে অনার্সে পড়ছে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক লুবনা খানম জানান, হাসপাতালে আনার আগেই রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, ঘটনার পর হৃদয় ঘরের ভেতরে অবস্থান করছিল। নিজের মাথার চুল নিজেই কাটা শুরু করে। সে যেন পালাতে না পারে সে জন্য স্থানীয়রা ঘরের দরজা বাইরে থেকে আটকে দেয়। পরে থানা পুলিশে খবর দেওয়া হয়। এ সময় হৃদয় আত্মহত্যার চেষ্টা করলে পুলিশ দরজা ভেঙ্গে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবুবকর মিয়া জানান, স্থানীয়দের সহযোগীতায় ছেলেকে আটক করেছি। নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। কি কারণে বাবাকে খুন করা হয়েছে তা এখনো জানা যায়নি। তবে তা জানার চেষ্টা চলছে।