রবিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৭, ০৯:২৩:৪২

ভারতের প্রশংসা করলেন খালেদা জিয়া

 ভারতের প্রশংসা করলেন খালেদা জিয়া

নিউজ ডেস্ক: মুক্তিযোদ্ধাদের এক সমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে প্রতিবেশী দেশ ভারতের ভূয়সী প্রশংসা করে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধে আমাদের প্রতিবেশী ভারতের অবদান আছে। তারা মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় দিয়েছিলেন। খাবার দিয়েছেন।

রোববার বিকালে রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের আয়োজনে ওই সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এক পর্যায়ে তিনি বলেন, আজকে যারা মুক্তিযোদ্ধা এখানে আছেন সবাই মুক্তিযুদ্ধে যুদ্ধে করে তো অবদান রেখেছেই। স্বাধীনতার পর আমাদের জনগণক আবার দেশে ফেরত আসতে সাহায্য করেছে। তার জন্য ভারতকে অনেক ধন্যবাদ জানাই।

এসময় বিএনপি চেয়ারপারসন আওয়ামী লীগের কড়া সমালোচনা করে বলেন, ‘স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে আওয়ামী লীগের লোকেরা হীনমন্যতায় ভোগে। তারা সত্যটা গোপন করে। শহিদ জিয়া স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তার ডাকে দেশের মানুষ যুদ্ধে গিয়েছে।’

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সবসময় বিএনপি এবং মুক্তিযোদ্ধাদের কথা শুনলে মাথা খারাপ করে। আজকে সমাবেশ এর জন্য ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটে অনুমতি দেয়নি। পরে মহানগর নাট্যমঞ্জে অনুমতি দেয় দুপুর ১২টায়। তারা আসলে মুক্তিযোদ্ধাদের ভয় পায়। এ যোদ্ধারা দেশ স্বাধীন করেছেন তাদের সম্মান দেয়া উচিত।

‘আওয়ামী লীগ কাউকে সম্মান দিতে জানে না। সেদিন বি. জেনারেল ইবরাহিমকে বঙ্গভবনে দাওয়াত দিয়েও ঢুকতে দেয়া হয়নি। আমরা প্যারেডে দাওয়াত পাই না। বিজয় দিবসে, স্বাধীনতা দিবসে আমরা দাওয়াত পাই না। “পাকিস্তানিদের কায়দায় তারা চলছে। দেশে গণতন্ত্র নেই।’

খালেদা জিয়া বলেন, আওয়ামী লীগ ছাড়া সকলের দাবি সবার অংশগ্রহণে নির্বাচন। সে জন্য আমাদের দাবি হলো, অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হতে হলে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখা যাবে না। আওয়ামী লীগ সংবিধান লংঘন করে বিনা ভোটে ক্ষমতায় গিয়েছে। কাজেই পার্লামেন্ট রেখে নির্বাচন হবে না।

বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, দেশে মৌলিক অধিকার, আইনের শাসন নেই, সভা সমাবেশের অধিকার নেই। আবার তারা বাকশালের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ যে একটার পর একটা অপকর্ম করছে তার জবাব যারা দিবে তাদেরকে হয় গুম করে ফেলে নয়তো জেলে বন্দি রাখে।

“আওয়ামী লীগ লুঠপাট করে দেশ শেষ করে দিচ্ছে। সকল প্রতিষ্ঠান আজ অকার্যকর। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নষ্ট করে দেয়া হয়েছে”। বাজারের অবস্থা আজ মারাত্মক। চালের দাম ৭০ টাকা, পেঁয়াজ ১৪০ টাকা কেজি। ৬০ টাকার নিচে কোন সবজি নেই। এই অবস্থার জন্য কারা দায়ী? এ সরকার। সবকিছু লুটপাট করছে। সরকারের এদিকে কোন খেয়াল নেই। তারা আছে শুধু গালাগালি। চুরি করবে তারা, দোষ দিবে আমাদের। এই অবস্থায় দেশ চলতে পারে না” বলেন তিনি।

সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করে বলেন, স্বাধীনতার সকল সুফল ভোগ করছে আওয়ামী লীগের লোকেরা। কাজেজেই আওয়ামী লীগকে রেখে কোন নির্বাচন হতে পারে না। আপনারা যদি এতো উন্নয়ন করেন তবে আসেন, দেখুন জনগণ কোন দিকে যায়।অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন দিন। সহায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন।

তিনি বলেন, আমরা অশান্তি চাই না। আমরা নির্বাচন করে জনগণের ক্ষমতা চাই। কাজেই সভা সমাবেশ করতে দিন। বাধা দিবে না। মুক্তিযোদ্ধাদের তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে পরাজিত করতে হলে আপনাদের আবারও জেগে উঠতে হবে। আন্দোলন, নির্বাচন এবং সংগ্রাম এক সাথে চলবে আমাদের।

সময় বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ বলেন, সময় এসেছে শপথ নেয়ার। একদিকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে হবে অন্যদিকে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে হবে। আমরা নেত্রীর নেতৃত্বে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, মানুষের অধিকার ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবো।

ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনও বলেন, আগামী নির্বাচন একটি নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে। শেখ হাসিনার অধীনে নয়। মুক্তিযোদ্ধাদের নির্বাচন এবং আন্দোলনের প্রস্তুতি নেয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।

মুক্তিযোদ্ধা দলের প্রতিষ্ঠাতা কর্নেল অলি আহমদ বলেন, আর স্লোগান দিয়ে লাভ নাই। এখন বসে থাকলে হবে না। পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। মিটিং করতে দিবে না এমন কোন অধিকার নেই। এ দেশ কারো বাপের না। নেত্রীকে বলবো, আপনার আর কিছু পাওয়ার নেই। দেশ আপনাকে অনেক দিয়েছে। এবার দেশকে গণতন্ত্র দিয়ে যান। স্বাধীনতা দিয়ে যান।
এমটিনিউজ২৪.কম/এন/মান

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে