এমটিনিউজ ডেস্ক: মুক্তিযুদ্ধের সময় জীবন বাজি রেখে দেশ স্বাধীন করেছেন। এরপর কাটিয়েছেন এলাকার মানুষের সেবা করে। বিয়ে-সংসারের বিষয়ে ছিলেন উদাসীন। বলেছিলেন, চিরকুমার হয়ে থাকবেন।
এ সংকল্প করেই কাটিয়ে দিয়েছেন এত দিন। এখন বয়স ৮০ ছুঁই ছুঁই। এবার বিয়ের পিঁড়িতে বসলেন চিরকুমার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নুরুল হক। বিয়ের কনে মীনা আক্তার। মায়ের একাকিত্ব দূর করতে মীনা বেগমকে বিয়ে দেন তার কলেজপড়ুয়া ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা অভিভাবক পেয়ে খুশি তিনি।
বৃহস্পতিবার (০৩ আগস্ট) লাখ টাকার দেনমোহরে ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদে বিয়ে হয় তাদের। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে সরকারের দেওয়া ‘বীরনিবাসে’ কনেকে নিয়ে গেছেন নুরুল হক।
বিয়ের সময় স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা এবং দুই পরিবারের ঘনিষ্ঠরা উপস্থিত ছিলেন। মীনা বেগমের বড় ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন নান্দাইল শহীদ স্মৃতি আদর্শ কলেজে পড়েন। স্বজনদের সঙ্গে মাকে মুক্তিযোদ্ধা সংসদে নিয়ে আসেন তিনি। নুরুল হকের সঙ্গে আগে থেকেই পরিচয় ছিল এই পরিবারের।
জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘বাবা জীবিত থাকা অবস্থায়ও এই বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন আমাদের বটবৃক্ষ।
এখন বাবা না থাকাতে স্থায়ীভাবে আরেকজন বাবা পেলাম। শুধু তা-ই নয়, তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। এটা আমাদের জন্য গর্বের।’ মীনা আক্তার বলেন, ‘আমি অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছিলাম। এখন একজন অভিভাবক পেলাম।’
বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল হক বলেন, ‘জীবন তো শেষ হয়ে গিয়েছিল আর কয়দিনই বাঁচব। ইচ্ছা ছিল না বিয়ে করার। তার পরও পরিবার ও সহযোদ্ধাদের অনুরোধে বিয়েতে রাজি হই।’
সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মাজহারুল হক ফকির বলেন, ‘আমরা একটা ইতিহাস করলাম। নিজেরাও ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে রইলাম। চিরকুমার একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সকলে মিলে রাজি করিয়ে বিয়েটা সম্পন্ন করলাম। এখন নুরুল হক একজন পরিপূর্ণ ব্যক্তি। তার জন্য দোয়া রইল।’-কালের কণ্ঠ