আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যানজটে আটকা পড়ে নিশ্চয়ই রাজধানী জাকার্তার ট্রাফিস বিভাগকে শাপশাপান্ত করছিলেন সনি সিতায়াওয়ান। তিন ঘণ্টা দেরিতে বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কারণে তিনি ধরতে পারেননি নির্ধারিত ফ্লাইট। পরের ফ্লাইটে গন্তব্যে পৌঁছে তিনি জানতে পারেন সেই বিরক্তিকর ট্রাফিক জ্যামই তাঁর জীবন বাঁচিয়েছে। অথচ গোটা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়ই যানজটের জন্য কুখ্যাত জাকার্তা সিটি।
গতকাল সোমবার ইন্দোনেশিয়ায় লায়ন এয়ারের যে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়ে সাগরে ডুবে যায়, সেটির যাত্রী ছিলেন ইন্দোনেশিয়ার অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা এই সনি সিতিয়াওয়ান। কিন্তু জাকার্তার কুখ্যাত যানজটের কারণে তিনি সময় মতো জেটি৬১০ ফ্লাইটের বিমানটি ধরতে পারেননি। গতকাল এ ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে সহকর্মীদের হারানো এই কর্মকর্তা সাংবাদিকদের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এই দুর্ঘটনায় দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয়ের ২০ কর্মকর্তা নিহত হন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সনি সিতায়াওয়ান বলেন, তিনি ও তাঁর সহকর্মীরা প্রতি সপ্তাহে এই ফ্লাইট ধরেন। কিন্তু গতকালের ফ্লাইটটি তিনি ধরতে পারেননি যানজটের কারণে। এএফপিকে তিনি বলেন, ‘আমি সাধারণত জেটি৬১০ ফ্লাইটটি ধরে থাকি। আমার বন্ধুরা ও আমি সব সময়ই এই বিমানটিতে যাই।’ কিন্তু আমি বুঝতে পারছিলাম না, টোলের কাছে কেন বাজে জ্যাম লেগেছে। আমি সাধারণত ভোর ৩টায় জাকার্তায় পৌঁছে থাকি। কিন্ত আজ সকালে আমি বিমানবন্দরে পৌঁছি ৬টা ২০ মিনিটে। ফলে আমি ফ্লাইট মিস করি।’
শেষ পর্যন্ত জাকার্তার এই যানজটই সিতায়াওয়ানের জীবনকে রক্ষা করেছে। তিনি টেলিভিশন ক্যামেরার সামনে কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, ‘এই প্রথম আমি আমার কান্না শুনতে পাচ্ছি। আমি জানি, আমার বন্ধুরা ওই ফ্লাইটে ছিল।’ সিতায়াওয়ান ইন্দোনেশিয়ার বান্দুং থেকে ওয়েস্ট জাভায় যান। তিনি জানান, দেরি হওয়ায় তিনি দ্বিতীয় ফ্লাইটে সেখানকার পানকল পিনাং শহরে পৌঁছেন এবং নিরাপদে অবতরণ করেন। তিনি বিমানবন্দরে নামার পর প্রথম তাঁর পরিবারের ফোন পেয়েই তিনি জানতে পারেন, আগের ফ্লাইটটি দুর্ঘটনায় পড়েছে। কিন্তু তিনি বেঁচে আছেন, তা তাঁদের পরিবারেরই বিশ্বাসই হয়নি।
সিতায়াওয়ান বলেন, ‘আমার পরিবার খুবই শোকাহত হয়ে পড়েছিল। আমার মা কাঁদছিলেন। আমি তাদের বললাম, আমি রক্ষা পেয়েছি। আমি কৃতজ্ঞ।’ সূত্র : এএফপি।